চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের ‘বিশেষ পরীক্ষা’ অসমাপ্ত রেখেই ওই শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্সের পরীক্ষার রুটিন দিয়েছে ইনস্টিটিউট। ফলে বিপাকে পড়েছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৪ সালে। পরীক্ষায় এক বা একাধিক কোর্সে অকৃতকার্য হন বেশ কিছু শিক্ষার্থী। পরবর্তী বছরে ওই কোর্সগুলোর পরীক্ষা পুনরায় দিলে আবারও অকৃতকার্য থেকে যান কিছু শিক্ষার্থী। এর মধ্যেই নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরবর্তী বর্ষের ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নেয় অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীরা।
পরে অকৃতকার্য ওই শিক্ষার্থী ও মানন্নোয়ন থাকা কিছু শিক্ষার্থীর আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে ওই কোর্সগুলোর ‘বিশেষ পরীক্ষা’ নিতে সম্মত হয়ে পরীক্ষা নেয়া শুরু করে ইনস্টিটিউট। ৩৬ জন শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেয়।
তবে সমস্যার শুরু হয়, যখন তিনটি পরীক্ষা অসমাপ্ত রেখেই বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে ইনস্টিটিউটটির বেশ কিছু শিক্ষক তাদের পূর্বের কর্মস্থল চবি ল্যাবরেটরি কলেজে ফিরে যান। এই শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত পরীক্ষা কমিটিই ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের বিশেষ পরীক্ষারি দায়িত্বে ছিলেন।
কলেজে যোগদানকালে সমাপ্ত হওয়া কোর্সগুলোর পরীক্ষার খাতাও নিয়ে যান ওই শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে একটি কোর্সের খাতা ছাড়া বাকি কোর্সগুলোর খাতা ইনস্টিটিউটে ফেরত আনা সম্ভব হয়। কিন্তু তিনটি পরীক্ষা অসমাপ্ত থাকায় ফল প্রকাশ হয় না এ পরীক্ষার। ফলে অমীমাংসিত থেকে যায় তাদের প্রথম বর্ষের পরীক্ষা।
এই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ও ফলাফলের কোনো সমাধান ছাড়া সম্প্রতি ওই শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্সের পরীক্ষার রুটিন দিয়েছে আইইআর কর্তৃপক্ষ। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা গত ২৮ জানুয়ারি এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা দ্রুততম সময়ে অমীমাংসিত পরীক্ষাগুলো গ্রহণে সম্মত হয়।
কিন্তু তাদের পরীক্ষার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে পূর্বের রুটিন অনুযায়ী আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি থেকেই মাস্টার্সের পরীক্ষা বলবৎ রাখে কর্তৃপক্ষ। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের দাবি বর্তমানে তাদের শিক্ষাজীবন ঝুঁকি ও চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পতিত হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, আমরা আমাদের সমস্যা সমাধানের জন্য দুইটি আবেদনপত্র কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করি। যদি আমাদের সমস্যা সমাধান না করেই এমএড (মাস্টার্স) পরীক্ষা শুরু করা হয় তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বশির আহাম্মদ বলেন, পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে আমরা চিঠি দিয়েছি দেড় বছর আগে। সর্বশেষ কিছুদিন আগেও চিঠি দিয়েছি। শিক্ষার্থীরা যদি কেউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়, তাহলে মাস্টার্সে ভর্তি হবে তারপর ক্লাস করে পরীক্ষা দিতে হবে যা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। এখন প্রায় ১০০ জন নিয়মিত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা আগামী ৯ তারিখ থেকে নেয়া হবে।
ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক চৌধুরী আমীর মোহাম্মদ মুছা বলেন, পরীক্ষা নেয়াটা ইনস্টিটিউটের ব্যাপার। তারা পরীক্ষার জন্য কমিটি করবে, রুটিন করবে, পরীক্ষা নিয়ে নেবে। তবে আগামী রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) উপাচার্য প্রক্টর ও ইনস্টিটিউট পরিচালকের সঙ্গে বসে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।